
আবুল কালাম আজাদ : ইউনিয়ন পরিষদ নয়, উপজেলা পরিষদ নয়, এমনকি এমপি নির্বাচনও নয়, রীতিমত ভোটের মাধ্যমে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য পাবনার চাটমোহর উপজেলার ‘‘জান্নাতুল বাকি” কবরস্থানের কমিটি গঠন নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে কবরস্থানের সভাপতি নির্বাচন করায়িএলাকার অনেকেই বেশ বিব্রতবোধ করছেন।
এধরনের নির্বাচন মনে হয় এটাই দেশের প্রথম। কবরস্থানের (গোরস্থানের) সভাপতি গঠন তাও আবার ভোটের মাধ্যমে সত্যিই আশ্চয ব্যাপার। পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও আংশিক জগতলা গ্রাম নিয়ে ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থানটি গঠিত। এবার কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই স্থানীয়ভাবে সভাপতিসহ কমিটি গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। স্থানীয় বিএনপির রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সভাপতির পদ দখল নিয়ে চলে চরম মতবিরোধ ও গ্রুপিং। এলাকায় দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করার। এলাকার আব্দুল মতিন মাষ্টারকে প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। ঘোষণা করা হয় তফশিল। কবরস্থানের সাথে সংশ্লিষ্ট তিন গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে একজন করে প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ভোটার গোপন ব্যালটের মধ্যেমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের সভাপতি নির্বাচিত করতে পারবেন। তফশিল ঘোষনার পর দুইজন সভাপতি পদে ৩০ হাজার টাকা করে জামানত দিয়ে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন।
আব্দুল কুদ্দুস (ছাতা মার্কা) এবং শরিফুল ইসলাম(চেয়ার মার্কা) নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী ২৪ মে শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ্ ময়দানে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর মোট ভোটার রয়েছে ৮ শতাধিক।
কবরস্থানের কমিটি গঠন নিয়ে নির্বাচনী পোষ্টারে পোস্টারে এলাকা ছেয়ে গেছে । জোরেশোরে চলছে নির্বাচনী প্রচারনা।
এলাকাবাসীরা জানান, তাদের চৌদ্ধ পুরুষও এধরনের ইলেকশন দেখেননি। এটা খুবই খারাপ। গোরস্থান নিয়ে এভাবে দলাদলি শুভকর নয়।
নিরবাচনে সভাপতি পদে অংশ গ্রহনকারী মূলগ্রাম ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা ও হাঙ্গামা হওয়ার আশংকা রয়েছে। এজন্য তিনি প্রশাসনসহ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এব্যাপারে অপর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী চাটমোহর উপজেলা যুবদলের ১ নং যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী শরিফুলের ভোট বা জন সমর্থন না থাকায় এমন ফন্দি করছেন। নির্বাচনে হাঙ্গামা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এলাকার মানুষ যাকে খুশি বেছে নেবেন। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার।
এদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান আব্দুল মতিন মাষ্টার বলেন, তিনি দুই প্রার্থীর সাথেই কথা বলেছেন। পরিবেশ অনূকূলে থাকলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । পরিবেশ নষ্ট হলে নির্বাচন সম্ভব হবে না। এদিকে প্রার্থীদের সবার নজর রাখতে হবে।
তবে কবরস্থান নিয়ে এমন ভোটযুদ্ধ ভালো চোখে দেখছেন না এলাকার সচেতন মহল।